বাংলাদেশের সঙ্গে একীভূত হতে চায় মেঘালয়ের চার গ্রাম

MagLaya3.jpg

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মেঘালয় রাজ্যের চারটি গ্রামের বাসিন্দা তাদের বাংলাদেশের সঙ্গে একীভূত করে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। শাসক গোষ্ঠীর সুযোগ-সুবিধার বঞ্চনা এবং অবহেলায় ক্ষুব্ধ হয়ে তারা এ দাবি তুলছেন। বাংলাদেশের উত্তরে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর ও কুড়িগ্রাম সীমানাঘেঁষা মেঘালয় রাজ্যের অবস্থান। এসব জেলার সীমান্ত দিয়ে মেঘালয়ে যাতায়াত করা যায়।

রাজ্যটির হিঙ্গারিয়া, হুরোই, লাহেলিন ও লেজরি গ্রামের বাসিন্দারা বলছেন, তাদের যাতায়াত সুবিধার জন্য রিমাবাই-বাতাও-বড়খাট-সোনাপুর সড়ক নির্মাণের জন্য রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বারবার দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু তাদের দাবিতে যেন কেউ কর্ণপাত করতে চাইছে না।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, ওই চার গ্রামের বাসিন্দারা বলছেন, সরকার যদি তাদের জন্য সব রকমের আবহাওয়া উপযোগী সড়ক বানাতে আগ্রহী না হয়, তবে তাদের এবং তাদের চারটি গ্রামকে যেন বাংলাদেশকে দিয়ে দেয়া হয়।

দীর্ঘদিন ধরেই অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন প্রকল্পে নানা বৈষম্য এবং বঞ্চনার শিকার হচ্ছিলেন এই চার গ্রামসহ মেঘালয়ের দুর্গম এলাকাগুলোর বাসিন্দারা। এই চার গ্রামের বাসিন্দারা এমন নজিরবিহীন দাবি জানানোয় তাদের বঞ্চনার বিষয়টি সামনে এলো।

যাতায়াত ব্যবস্থা, মোবাইল ও মেডিকেল সেবার দিক থেকে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের সব রকমের সুযোগ-সুবিধার বঞ্চনার কথা উল্লেখ করে গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, সিলেট সীমান্তঘেঁষা এই চার গ্রামের পাঁচ হাজার মানুষকে জীবন-জীবিকার জন্য বাংলাদেশের ওপর নির্ভর করতে হয়।

চার গ্রামের মুখপাত্র কিনজাইমন আমসে বলেন, এটা একেবারেই স্পষ্ট যে সীমান্ত এলাকায় বসবাসরতদের জীবন সরকারের কাছে কোনো কিছুই না এবং আমরা শুধু ভোটের জন্য ব্যবহার হই। যদি সরকার সত্যিকারার্থেই আমাদের ভারতীয় মনে করে এবং আমাদের সমস্যাগুলো গুরুত্ব দিতে চায়, তবে তাদের উচিত শিগগিরই আমাদের সড়ক সমস্যার সমাধান করা এবং এই সমস্যাগুলো সহজ করতে অন্তর্বর্তী পদক্ষেপ নেয়া। এতে কোনো ফল না হলে কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়া ছাড়া লোকজনের হাতে কোনো উপায় থাকবে না।

মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলং থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে পূর্ব জৈন্তা পার্বত্য জেলার অধীনে এ চার গ্রাম। আমসে বলেন, বঞ্চিত হতে হতে এখানকার বাসিন্দারা খুবই হতাশ এবং ক্লান্ত। সেজন্য তাদের বিকল্প চিন্তা মাথায় এসেছে।

সম্প্রতি চার গ্রামের বাসিন্দাদের বৈঠকে তাদের দুর্দশা-কষ্ট এবং করণীয় বিষয়ে আলাপ হয়েছে জানিয়ে মুখপাত্র আমসে আরও বলেন, আমাদের গ্রামগুলোর দরবার ও পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, যদি সরকার আমাদের দিকে না তাকায়, আমাদের জন্য রাস্তা বানাতে আগ্রহী না হয়, তবে তারা যেন এই চার গ্রাম ও পাঁচ হাজারের বেশি মানুষকে বাংলাদেশকে দিয়ে দেয়।

‘রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার যেহেতু আমাদের সমস্যা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে তাই গ্রামের বাসিন্দারা তাদের জন্য রাস্তা নির্মাণে বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি লেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে’ বলেন আমসে। সূত্র : জাগো নিউজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top