শেষ শ্রদ্ধায় প্লেব্যাক-সম্রাট এন্ড্রু কিশোর

andro-as.jpg

বিনোদন ডেস্ক :

আজ বুধবার (১৫ জুলাই) সকালে এন্ড্রু কিশোরের মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘর থেকে সরাসরি সিটি চার্চে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর সকাল ৯টার দিকে সেখানে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান শুরু হয়। দুপুরে তাকে পাশেই খ্রিস্টান কবরস্থানে সমাহিত করা হবে। লাখো-কোটি ভক্তের চোখের জলে বাংলাদেশের কণ্ঠরাজ এন্ড্রু কিশোরকে চিরবিদায় দেয়া হবে।

সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোরের শেষকৃত্য শুরু হয়েছে। ফুলে ফুলে সাজানো হয়েছে এন্ড্রু কিশোরকে। প্রিয় এই শিল্পীর পরিবারের সদস্য ও শুভাকাঙ্ক্ষী-ভক্তরা তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন। রাজশাহী থেকে ঢাকা, সেখান থেকে বাংলা গানের পঙ্খিরাজে চেপে সারা পৃথিবীর বাংলাভাষীদের হৃদয় ভ্রমণ শেষে কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোর, বাংলার অমর প্লেব্যাক-সম্রাট পাড়ি দিচ্ছেন অন্য ভুবনে।

মহামারির কাল না হলে নিশ্চয়ই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তাঁকে শ্রদ্ধা জানানো হতো। সারাদেশ থেকে আসা অনুরাগীদের ফুলে ডুবে থাকত তাঁর সারা দেহ। ইচ্ছা থাকলেও রাজশাহীর শহীদ মিনারেও নেয়া হচ্ছে না তাঁকে। সংগীতশিল্পীদের মধ্যে তেমন কেউ যেতে পারছেন না শেষযাত্রায় অংশ নিতে।

ক্যান্সারের কাছে পরাজিত হয়ে ৬ জুলাই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন প্লেব্যাক সম্রাট এন্ড্রু কিশোর। তার পর অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানরত তার দুই সন্তানের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছিল। বাবা এন্ড্রু কিশোরকে শেষবারের মতো দেখতে সোমবার অস্ট্রেলিয়া থেকে রাজশাহী এসে পৌঁছেছেন তার মেয়ে মিনিম এন্ড্রু সংজ্ঞা।

আর ছেলে জয় এন্ড্রু সপ্তক ফিরেছেন বৃহস্পতিবার। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে বড় মেয়ে এন্ড্রু সংজ্ঞা টিকিট না পাওয়ায় ফিরতে দেরি হচ্ছিল। ফেরার পর সংজ্ঞা হাসপাতালের মর্গে গিয়ে বাবাকে এক নজর দেখে এসেছেন। এন্ড্রু কিশোর চলে গেছেন এটি এখনও বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে অনেকের।

বড় বোন মার্সেলা শিখা বিশ্বাস যখন গান শিখতেন ওস্তাদ আবদুল আজিজ বাচ্চুর কাছে, এন্ড্রু তখন তৃতীয় শ্রেণির বালক। বোনের পাশে চুপ করে বসে থাকতেন। একসময় বড় দুই ভাইবোনকেই পাঠিয়ে দেয়া হলো বরিশালে বোর্ডিং স্কুলে।

ওস্তাদজি এসে তাঁদের বাবাকে অনুরোধ করলেন, তাহলে এন্ড্রুকে গান শেখানো হোক। সংগীতের সমঝদার বাবা রাজি হলেন। হাসিমুখে রোজ সাইকেলে করে ছেলেকে সুরবাণী সংগীত বিদ্যালয়ে নিয়ে যেতে শুরু করলেন। ১৯৬৪ সালে এভাবেই রাজশাহী শহরে গানে হাতেখড়ি হলো এন্ড্রু কিশোরের। পরের ৫৬ বছর সংগীতের ইতিহাস সবারই জানা।

ক্যানসারের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই শেষে ৬ জুলাই রাজশাহীতে মারা যান এন্ড্রু কিশোর। চিকিৎসার চেষ্টাকে ব্যর্থ করে সিঙ্গাপুর থেকে ফিরেই ফোন করেছিলেন নিজের জীবনের প্রথম হিট গানের সুরকার আলম খানকে। জানিয়েছিলেন নিজ শেষ অবস্থার কথা। দ্বৈত কণ্ঠে বহু গান করেছিলেন যে সাবিনা ইয়াসমীনের সঙ্গে, তাঁর সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছিলেন বেশ কবার। সাবিনা বলেছিলেন রাজশাহী না গিয়ে ঢাকায় আরেকবার ভালো ডাক্তার দেখাতে। কিশোর চেয়েছিলেন রাজশাহীতেই শেষ কয়েকটা দিন কাটাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top